দেশের শীর্ষস্থানীয় তথ্যপ্রযুক্তি সংস্থা টাটা কনসালট্যান্সি সার্ভিসেস (TCS) জানিয়েছে, সম্প্রতি তারা মোট কর্মীর প্রায় এক শতাংশ, অর্থাৎ প্রায় ৬ হাজার কর্মীকে “রিলিজ” (Release) করেছে। সংস্থার পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, এটি কোনও গণছাঁটাই নয়, বরং কর্মী পুনর্গঠন প্রক্রিয়ার অংশ। টিসিএস-এর চিফ হিউম্যান রিসোর্স অফিসার (CHRO) সুদীপ কুন্নুমাল স্পষ্টভাবে বলেছেন, ‘বিভিন্ন মহলে যে বিপুল ছাঁটাইয়ের খবর ঘুরছে, তা অত্যন্ত বাড়িয়ে বলা এবং বাস্তবসম্মত নয়।’
কুন্নুমাল আরও বলেন, “আমরা কোনও নির্দিষ্ট সংখ্যার পিছনে ছুটছি না। বর্তমানে মোট কর্মীর প্রায় এক শতাংশকে অর্থাৎ মাঝারি ও সিনিয়র স্তরের প্রায় ৬ হাজার মানুষকে আমরা ছেড়ে দিয়েছি, যাদের উপযুক্ত ভূমিকায় পুনর্বিন্যাস করা সম্ভব হয়নি।”
তথ্যপ্রযুক্তি কর্মীদের সংগঠন NITES-এর পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ২০২৬ অর্থবর্ষের দ্বিতীয় ত্রৈমাসিকে (Q2 FY26) টিসিএস-এর মোট কর্মীসংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৫,৯৩,৩১৪, যা আগের ত্রৈমাসিকে ছিল ৬,১৩,০৬৯। অর্থাৎ, গত তিন মাসে সংস্থাটি প্রায় ১৯,৭৫৫ জন কর্মী হারিয়েছে।
তবে টিসিএস-এর দাবি, এটি ছাঁটাই নয়, বরং একটি নিয়মিত পুনর্গঠন প্রক্রিয়া। কুন্নুমাল বলেন, “যখন আমরা এই প্রক্রিয়া শুরু করি, তখন থেকেই আমরা বলেছিলাম যে সহানুভূতি ও সম্মানের সঙ্গে এটি সম্পন্ন করা হবে। আমরা প্রত্যেক প্রভাবিত কর্মীর সঙ্গে সহানুভূতির সঙ্গে কথা বলেছি এবং ক্ষতিপূরণের বিষয়েও শিল্পমান অনুযায়ী ব্যবস্থা নিয়েছি।”
এই সময়েই টিসিএস জানিয়েছে, চলতি ত্রৈমাসিকে তারা ১৮,৫০০ জন নতুন কর্মী নিয়োগ করেছে। সংস্থার মানবসম্পদ প্রধানের ভাষায়, “যে সমস্ত অফার লেটার ইস্যু করা হয়েছে, সবগুলিই আমরা সম্মান জানাচ্ছি। ক্যাম্পাস থেকে নিয়োগের প্রক্রিয়াও যথাসময়ে এগোচ্ছে।”
আগামী অর্থবর্ষে টিসিএস-এর লক্ষ্য ছিল ৪০ হাজারেরও বেশি নতুন কর্মী নিয়োগ করা। তবে বর্তমান বাজার পরিস্থিতি বিবেচনা করে সেই পরিকল্পনায় সামান্য পরিবর্তন আসতে পারে বলে ইঙ্গিত দিয়েছেন তিনি।
সংস্থার ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা সম্পর্কে টিসিএস জানিয়েছে, তারা প্রযুক্তি, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (AI), বাজার সম্প্রসারণ এবং কর্মী পুনর্গঠন— এই চারটি ক্ষেত্রে বড় মাপের বিনিয়োগ করছে, যাতে নিজেদের বিশ্বের অন্যতম শীর্ষ এআই-চালিত প্রযুক্তি পরিষেবা সংস্থা হিসেবে প্রতিষ্ঠা করা যায়।
এছাড়া, সংস্থার তরফে জানানো হয়েছে, চলতি ত্রৈমাসিকে কর্মীরা আগের তুলনায় বেশি কোয়ার্টারলি বোনাস ও ভ্যারিয়েবল ইনসেন্টিভ পাবেন। জুনিয়র স্তরের কর্মীদের জন্য ১০০ শতাংশ বোনাসের নিয়ম বহাল থাকবে, আর সিনিয়র কর্মীদের পারফরম্যান্সের ভিত্তিতে আরও বেশি বোনাস দেওয়া হবে।