বৃহস্পতিবার, ১৮ মে ২০২২; ১২:১৬ পূর্বাহ্ণ
গত কয়েকদিনে আমাদের দেশে ঘটে যাওয়া নানা ঘটনা দেখে মনে হলো প্রথম স্যানিটাইজ করা দরকার আমাদের ব্রেইনের, এবং এর একমাত্র স্যানিটাইজার হচ্ছে কাউন্সেলিং। এবং এক্ষেত্রে পরিবারের অপেক্ষাকৃত তরুণদের দরকার বাকি সদস্যদের সচেতন করে তোলা।
বিদেশে মানুষ এই কদিন বাসায় কিভাবে সময় কাটাচ্ছেন সেটা জানতে গত কয়েকদিন ধরে গভীর আগ্রহ নিয়ে বিদেশী পত্রিকাগুলো পড়লাম। এখানে তার একটি সারসংক্ষেপ তুলে ধরার চেষ্টা করছি:
১. পরিবারের সাথে একান্তে সময় কাটানো। ব্যাস্ত পৃথিবীতে মানুষ নিজের পরিবারের সাথেও যোগাযোগের ক্ষেত্রে অনলাইন নির্ভর হয়ে পড়েছিল। এই সময়টাকে কাজে লাগানো যেতে পারে পারিবারিক আড্ডা দেয়ার সময় হিসেবে।
২. বই পড়া অথবা বড় দৈর্ঘের কোনো মুভি যেগুলো কাজের চাপে সময় করে দেখে উঠতে পারেননি সেগুলো পড়া এবং দেখা।
৩. নতুন নতুন রান্নার রেসিপি শেখা এবং সেগুলো তৈরী করে পরিবারের সদস্যদের মাঝে পরিবেশন করা। আমাদের দেশে ছেলেরা সাধারণত কিচেন থেকে একটু দূরে থাকে, যদিও গত কয়েক বছরে এর কিছুটা পরিবর্তন হয়েছে, এ সময়টিতে কিচেন রুম আরো ভালোভাবে এক্সপ্লোর করা যেতে পারে।
৪. পরিবারের সদস্যদের মধ্যে বিভিন্ন ধরণের বোর্ড গেইম যেমন ক্যারাম, দাবা, লুডু এ জাতীয় খেলাধূলার প্রতিযোগীতা চালু রাখা।
৫. বাসাকে নতুনভাবে গোছানো, সেলভগুলো পরিষ্কার করা, এবং বাসা নিজ হাতে রং করে নতুন রাখা।
৬. বাসার সব কাপড় চোপড় ধৌত করা এবং মনকে চাঙ্গা রাখতে প্রতিদিন নতুন নতুন জামা-কাপড় পরিধান করা।
৭. নিয়ম করে প্রতিদিন এক্সারসাইজ করা যেতে পারে এবং সেটা অবশ্যই বাসার মধ্যে।
৮. যাদের লেখালেখির অভ্যাস আছে বিশেষ করে কবিতা, গবেষণা প্রবন্ধ – তাদের জন্য এটা লেখালেখি করার সুবর্ণ সময়।
৯. সকাল এবং বিকেলে নিয়ম করে চা কিংবা কফি বানানো এবং সেটা পরিবারের সদস্যদের সাথে শেয়ার করা।
১০. এই সময় সবচেয়ে কঠিন কাজটি হচ্ছে বাসায় বাচ্চা থাকলে তাকে সামলানো। কারণ বাচ্চারা বেশীক্ষন বাসায় থাকতে চায়না। বিবিসি নিউজের একটি প্রতিবেদনে দেখলাম ইতালি তে বাংলাদেশী বাবা-মা রা সবচেয়ে বেশী সমস্যায় পড়েছেন বাচ্চাদের নিয়ে কারণ তারা বাইরে যেতে চায়, বন্ধুদের সাথে খেলাধুলা করতে চায় । বাসায় এসময় তাদেরকে বিভিন্ন রকম শিক্ষণীয় ভিডিও গেমস দিয়ে ব্যাস্ত রাখা যেতে পারে।শিশুদের দিয়ে আর্টস এবং ক্রাফ্টস তৈরী করানোর মাধ্যমে ব্যস্ত রাখা।
১১. আমাদের প্রত্যেকেরই বিভিন্ন ধরনের শখ থাকে যেমন নতুন নতুন ভাষা শেখা, ক্যালিগ্রাফি শেখা, গান- বাজনার যন্ত্রপাতি বাজানো শেখা – এগুলো সবই ইন্টারনেট থেকে বিভিন্ন অ্যাপস ডাউনলোড করে শেখা যেতে পারে।
১২. বিভিন্ন ধরণের সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যম যেমন Skype, Snapchat, Messenger ব্যবহার করে ভিডিও কনফারেন্স এর মাধ্যমে বন্ধুদের সাথে আড্ডা দেয়া।
১৩. আপনার জীবনের এই পর্যন্ত ঘটে যাওয়া গুরুত্বপূর্ণ ঘটনাগুলোর একটা লিস্ট তৈরী করা । গত বছর আপনার জীবনে কি ঘটলো ? কিংবা তার আগে ? এবং এগুলো নিয়ে একটু ভাবা।
১৪. পরিবারের বয়স্ক লোকদের অডিও কিংবা ভিডিও ইন্টারভিউ নিয়ে আর্কাইভ করে রাখা । হয়ত ভবিষ্যত স্মৃতিচারণে কাজে লাগতে পারে।
১৫. ঘুমানো। যতটা সম্ভব ঘুমিয়ে নিন।
১৬. মসজিদ কিংবা মন্দিরে এই সময়টাতে বড় জমায়েত করতে না যাওয়াটা ভালো। সৌদি আরব এবং ইরানসহ মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলো ইতিমধ্যেই এ সম্পর্কিত নিৰ্দেশনা জারি করেছে। কিছু কিছু দেশে আজানের শব্দ ও পরিবর্তন করেছে যার অর্থ নির্দেশ করে বাসায় থেকে নামাজ পড়ার। এ সময়টিতে ধর্মীয় অনুশাসন এর কাজটি যতটা সম্ভব বাসায় করা ভালো।